ফ্যাটি লিভারের লক্ষণ কি কি : মানবদেহে অতি গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গ হলো লিভার। দেহকে সুস্থ্য ভাবে কার্যক্ষম রাখার জন্য এই লিভাকে অনেক কাজ করতে হয়। তাই আমাদের এই পোস্টে আপনাদের সামনে ফ্যাটি লিভারের লক্ষণ গুলো কি কি সে সম্পর্কে বিস্তারিত তুলে ধরা হলো।
ফ্যাটি লিভার কী
মানব দেহে গুরুত্বপূর্ণ হচ্ছে লিভার। দেহকে সুস্থ্য কার্যক্ষম রাখার জন্য লিভারকে অনেক কাজ করতে হয়, যেমন খাদ্য হজম করতে, গ্লাইকোজেনের সঞ্চয়, প্লাজমা প্রোটিন সংশ্লেষণ, ঔষধ ইত্যাদি নিয়ন্ত্রণ করতে সাহায্য করে। লিভার কোষে অতিরিক্ত চর্বি জমা হলে যা তার গাঠনিক উপদানের ৫-১০শতাংশ তাকে ফ্যাটি লিভার বলে। কোন মানুষের দেহের প্রয়োজন ছাড়া অতিরিক্ত চর্বি খাবারের সাথে গ্রহন করে,তখন এ চর্বি ধীরে ধীরে তার কলা বা টিসুতে জমতে থাকে।
ফ্যাটি লিভারের রোগের লক্ষণ
ফ্যাটি লিভারের রোগের লক্ষণ হলো: রোগীর ক্লান্তি, অবসাদ ওপরের পেটের ডান দিকে ব্যথা ইত্যাদি। এবং পরীক্ষা করার পর আরও কিছু লক্ষণ দেখা যায় যেমন, রোগীর এসজিপিটি স্বাভাবিকের চেয়ে বেশি।এদের বিলুরুবিনের মাত্রা স্বাভাবিক থাকে। আবার কারো ক্ষেত্রে দেখা যায় লিভারে অ্যানজাইমের মাত্রা স্বাভাবিক কিন্তু লিভারের আল্ট্রাসনোগ্রামে চর্বির মাত্রা বেশি।
ফ্যাটি লিভার হলে করনীয় এবং চিকিৎসা
রোগীর পেটের আল্ট্রাসনোগ্রাম, লিভার বায়োপসি পরীক্ষা করলে রোগটি নির্ণয় করা যায়। লিভারে যদি এনজাইমগুলো বেড়ে যায়, তখন বুজতে হবে, তার ক্ষেত্রে এই ফ্যাটি লিভারের কারনে দীর্ঘমেয়াদি রোগ হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। এই আশঙ্কা দেখার পর রোগীর জীবনযাপনের ধরন পরিবর্তন করতে হবে। যেমন, ওজন কমাতে হবে এবং কিছু ঔষধ খেতে হবে। যদি শুধু ফ্যাটি লিভার থাকে, পাশাপাশি লিভারের অন্যান্য কার্যক্রম যদি ভালো থাকে, যদি খুব বেশি স্থুলকায় না হোন, তাহলে শুধু একটু জীবনযাপনের ধরন পরিবর্তন করলে হয়। এবং সুষম খাবার, কায়িক পরিশ্রম, নিয়মিত ব্যায়াম এগুলো নিয়মিত করলে ভালো থাকবেন।
ফ্যাটি লিভারের ব্যায়াম
১.প্ল্যাষ্ক
এই ব্যায়ামটি করতে পারলে শরীরের কোর স্ট্রেন্থ বৃদ্ধি পায়। সহজে বললে পুরো শরীর ব্যায়াম হয়, শক্তি বাড়ে।
২.অ্যাবডোমিনাল ক্রাঞ্চেস
এই ব্যায়াম করলে পেটের পেশি সুগঠিত হয়।
৩.বেজিস্টেন্স ট্রেনিং এবং ওয়েট লিফটিং
ফ্যাটি লিভারকে দূরে সরিয়ে রাখতে হলে আপনাকে রেজিস্টেন্স ট্রেনিং এবং ওয়েট লিফটিং করতে হবে।এই ব্যায়ামের মাধ্যমে পুরো দেহ থেকে দ্রুতগতীতে মেদ ঝরে যায়। পেশি হয় সুগঠিত। তাই প্রতিনিয়ত এই ব্যায়াম কার জরুরি।
আরও পড়ুনঃ মাজা ব্যাথা হলে করণীয়?
৪.এরোবিক এক্সারসাইজ
এরোবিক এক্সারসাইজ হলো সাইকেল চালানো এবং সাতার কাটা। এই দুইটি ব্যায়াম নিয়মিত করলে শরীর সুস্থ থাকে। এবং শরীরের মেদ ঝরে।
৫. সবচেয়ে সহজ ব্যায়াম হলো হাটার ব্যায়াম। প্রতিদিন ৩০ মিনিট করে হাটতে হবে। হাটার সময় যেন শরীর থেকে ঘাম বের হয় সেজন্য জোরে হাটতে হবে।
আরও পড়ুনঃ আগুনে পোড়া প্রাথমিক চিকিৎসা
ফ্যাটি লিভার হলে কি খাওয়া উচিত
ডাল ও বীজজাতীয় খাবার: ডাল, ছোলা, মটরশুঁটি ইত্যাদি খাবারে স্টার্চ ও ফাইভার ভরপুর মাত্রায় থাকে। এসব খাবার পরিপাকতন্ত্রের জন্য স্বাস্থ্যকর, এবং এগুলি ট্রাইগ্লিসারাইড কমাতে সাহায্য করে। সবুজ শাকসবজির মধ্যে যে পলিফেনল ও নাইট্রেট পাওয়া যায়, তা লিভারের চর্বি কমাতে সাহায্য করে।
আরও পড়ুনঃ হাপানি প্রতিরোধের উপায়?
১.নিয়মিত কফি পান করা উচিত। এর ফলে লিভার ভালো থাকে।
২.লিভারের স্বাস্থ্যরক্ষা করতে আখরেট অনেক উপকারি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে।
৩. লিভারের রোগীদের জন্য অন্যতম একটি আদর্শ পানি হচ্ছে গ্রিন টি।
৪. অলিভ ওয়েল বা জলপাইয়ের তেল শরীরের জন্য খুবই উপকারি।
৫.ফ্যাটি অ্যাসিড যুক্ত খাবার লিভারের জন্য উপকারী। যেমন, সালমন,সার্ডইন,টুনা এবং ট্রাউটের মতো ফ্যাটযুক্ত মাছ অনেক পরিমানে ওমেগা ৩ ফ্যাটি অ্যাসিড থাকে। এগুলো চর্বি কমাতে সাহায্য করে।