✪শিশুদের পাতলা পায়খানা ও ডায়রিয়াজনিত সমস্যার প্রতিরোধ করার উপায় ও করনীয় নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করা হলোঃ
সাধারনত জীবানু পেটে ঢোকার কারনে শীশুদের ডায়রিয়া বা পাতলা পায়খানা হয়ে থাকে। প্রাপ্তবয়স্কদের তুলনায় শিশুদের ডায়রিয়ায় আক্রান্ত হওয়ার সম্ভবনা বেশি। কারন প্রাপ্তবয়স্কদের তুলনায় শিশুদের পানিশূন্যতায় আক্রান্ত হয় বলে। পানিশূন্যতার দ্রুত চিকিৎসা না করলে পানিশূন্যতা মারাত্মক রূপ ধারণ করতে পারে। ☆শিশুদের ডায়রিয়ার লক্ষন নিয়ে অসাধারণ আলোচনাঃ ডায়রিয়া বলতে আমরা বুঝি, সারাদিনে তিনবার বা তার বেশি পাতলা পায়খানা হলে তাকেই সাধারণত ডায়রিয়া বলা হয়। বুকের দুধ পান করার কারনে শিশুদের পায়খানা স্বাভাবিকভাবে কিছুটা নরম বাআঠালো হয়। সেটা ডায়রিয়া নয়। তবে শিশুর যদি স্বাভাবিক তুলনায় ঘনঘন পাতলা পায়খানা হয়। সেটাকে ডায়রিয়া হিসেবে ধরে নেওয়া হয়।
✪শিশুদের পানিশূন্যতার লক্ষনঃ ডায়রিয়ার প্রথম চিকিৎসা হলো পানিশূন্যতা পূরন করা। কারন ডায়রিয়া হলে শরীর থেকে প্রচুর পরিমাণ পানি ও লবন বেরিয়ে যায়। তখনই পানিশূন্যতা দেখা দেয়। এই পানিশূন্যতার ঘাটতি পূরন না করলে তখনই পানিশূন্যতা মাত্রাতিরিক্ত পর্যায়ে চলে যায়। এ কারনে মৃত্যু পর্যন্ত হতে পারে।
পানিশূন্যতার প্রধান লক্ষমগুলো হচ্ছে=
➤মুখ ও ঠোটঁ শুকিয়ে আাসা
➤পিপাসা লাগা
➤চোখ শুকনো লাগা বা খচখচ করা
➤গাঢ় হলুদ, তীব্র দুর্গন্ধযুক্ত প্রস্রাব হওয়া
➤প্রস্রাবের পরিমান কমে যাওয়া(১দিনে ৪বারের চেয়েও কম প্রস্রাব হওয়া)
➤ক্লান্ত লাগা ও মাথা ঘুরানো বা ঝিমঝিম করা
nnn
✪ ৫ বছরের কম বয়সী শিশুদের আরও কিছু লক্ষন দেখা যায়। এসব লক্ষন তুলনামূলকভাবে মারাত্মক, তাই শিশুদের এসব লক্ষন দেখা দিলে নিয়ে যাওয়া জরুরি। লক্ষনগুলো হলো-
➤শ্বাসপ্রশ্বাস বেড়ে যাওয়া
➤মাথার তালুর সামনের দিকের নরম অংশটি বসে যাওয়া, এবং ঝিমিয়ে পড়া।
➤কান্না করলেও চোখ থেকে পানি না পড়া।
✪ডায়রিয়া শিশুদের পানিশূন্যতার চিকিৎসা যেভাবে করবেন তা হলোঃ ডায়রিয়া চিকিৎসা করনীয় হলো শরীরের পানি ও লবনের ঘাটতি মেটানো। তাই ডায়রিয়া হলে শিশুদের পর্যাপ্ত পরিমানে খাবার স্যালাইন ও তরল পানিও পুষ্টিকর খাবার খাওয়াতে হবে। প্রতিবার পাতলা পায়খানার পর ২বছরের কম বয়সী শিশুদের ৫০-১০০ মিলি তরল পানি খাওয়াবেন,২থেকে ১০বছর বয়সী শিশুদের ১০০-২০০মিলি তরল পানি খাওয়াবেন, আর ১০ বছরের বেশি বয়সী শিশুদের তরল পানি খাওয়াবেন যতটুকু তারা খেতে পারে।
✪শিশুদের ডায়রিয়া হলে যা খাওয়ানো উচিত তা হলোঃ
➤শিশুদের বুকের দুধ বা বোতলের দুধ খাওয়ানো চালিয়ে যাবেন, এবং বমি করলে অল্প অল্প করে বারবার খাওয়াতে পারেন।
➤তরল পানির মধ্যে চিড়ার পানি,ভাতের মাড়,কিংবা ডাবের পানি খাওয়া যেতে পারে।
➤ফর্মুলা বা শক্ত খাবার খাচ্ছে এমন শিশুদের দুুই বেলা খাবারের মাঝে ছোট ছোট চুমুকে পানি খাওয়াবেন।
✪ডায়রিয়া হলে যা খাওয়াবেন নাঃ
বাজার থেকে কেনা ফলের জুস, কোমল পানীয় ইত্যাদি খাওয়ানো থেকে বিরত থাকবেন। কারন এসব খাওয়ানোর ফলে ডায়রিয়া আরো খারাপ হয়ে যেতে পারে।nnn
✪ডায়রিয়া সাধারনত ৫-৭দিনের মধ্যে স্বাভাবিকভাবে বন্ধ হয়ে যায়, তবে ডায়রিয়া কারনে পানিশূন্যতা দ্রুত চিকিৎসা প্রয়োজন। কিছু ঔষধদের মাধ্যামে বাড়িতে বসেই চিকিৎসার মাধ্যমে ডায়রিয়া থেকে মুক্তি পাওয়া যায়। ঔষধগুলো হলোঃ
১- খাবার স্যালাইন
২-জিংক ট্যাবলেট
৩- প্যারাসিটামল
৪-লোপেরামাইড- জাতীয় ঔষধ।
✪শিশুর ডায়রিয়ায় কখন দ্রুত ডাক্তারের কাছে যাবেনঃ
➤পায়খানার সাথে রক্ত বা আঠালো মিউকাস যাওয়া
➤ ডায়রিয়া অবস্থার উন্নতি না হওয়া
➤১২ষন্টয় একবারও প্রস্রাব না হওমা
➤ পানিশূৃন্যতা পূরন না হ্ওয়া
➤ প্রচন্ড পেটব্যাথা
✪ডায়রিয়া হলে যেসব ঔষধ খাওয়া যাবে নাঃ
➤১২বছরের কম বয়য়সী ছোট বাচ্চাদের ডায়রিয়া হলে যা করনীয় শিশুদের ডায়রিয়া বন্ধ ঔষধ খাওয়া যাবে না
➤১৬ বছরের কম বয়সী শিশুদের অ্যাসপিরিন আছে এমন ঔষধ দিবেন না। খেয়াল করে দেখবেন ঔষধের নামের নিচে ছোট করে ASPIRIN শব্দটি লেখা আছে কি না। চিকিৎসকের পরামর্শ ছাড়া কোন অ্যান্টিবায়োটিক বা দ্রুত পাতলা পায়খানা বন্ধ করার ঔষধ খাওয়াবেন না।
✪শিশুদের ডায়রিয়া হলে ডায়রিয়ার গুরুতর কিছু লক্ষন দেখা দিলে দ্রুত ডাক্তারের পরামর্শ নিতে হবে।
লক্ষনগুলো হলোঃ
➤ডায়রিয়ার অবস্থার উন্নতি না হলে
➤১২ঘন্টায় একবারও প্রস্রাব না হলে
➤ডায়রিয়ার সাথে ২ দিনের বেশি সময় ধরে জ্বর থাকলে।
nnn
➤পায়খানার সাথে রক্ত বা আঠালো মিউকাস বের হলে।
Tags
Health